রোজায় কী খাবেন, কী খাবেন না
রমজানে কী খাবেন কী খাবেন না
রোজায় কী খাবেন আর কী খাবেন না, এই নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকেই। রোজা রেখে সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার কারণে সব খাবারকেই মুখরোচক আর মজাদার মনে হয়। তখন যা দেখে তাই খেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সবধরণের খাবার এই সময় শরীরের জন্য উপযোগী নয়। রোজার সময় নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। এই অনিয়মে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবার এই বছর প্রচণ্ড গরমে লম্বা সময় রোজা থাকছে হচ্ছে। ফলে সুস্থভাবে রোজা রাখার জন্য মেনে চলা চাই সঠিক ডায়েট চার্ট। চলুন জেনে নেই রোজায় কী খাবেন আর কী খাবেন না।
অনেকেই সেহরিতেই চা কফি পান করে থাকেন। কিন্তু এটি একদমই ঠিক নয়। চা-কফির ক্যাফেইন দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে, তাই সেহরিতে চা-কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
পাউরুটি বা শুকনো খাবার খেয়ে রোজা রাখেন অনেকেই। কিন্তু এটি একদমই ঠিক নয়। কারণ এটি স্বাভাবিকভাবে আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহ করবে তবে তা অল্প সময়ের জন্য। এটি শরীরকে পানিশূন্য করে শক্তিহীন করে তুলবে। সুতরাং শুকনো ও প্রসেসড কার্বোহাইড্রেট থেকে দূরে থাকুন।
গরমকালে রোজা হলে মানুষ বেশি দুর্বলতা বোধ করে পানির অভাবে। প্রচণ্ড রোদ এবং গরমে দেহ পানিশূন্য হয়ে যায়, তাই সেহরিতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করে নিন। প্রায় আধা লিটারের মতো পানি পান করবেন। প্রয়োজনে আরও বেশি পান করুন, কিন্তু এর চাইতে কম করবেন না।
শরীর পানিশূন্য হয়ে গেলে শক্তি কমে যায়, তাই এমন খাবার খেতে হবে যা দেহে এনার্জি ধরে রাখতে পারে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খাবেন পরিমাণ মতো। এতে ক্ষুধার উদ্রেকও কম হবে এবং এনার্জিও থাকবে অনেক।
একটি উপায়ে সারাদিন দেহকে পানিশূন্যতার হাত থেকে বাঁচাতে পারেন, আর তা হলো পানিসমৃদ্ধ ফল রাখা সেহরির তালিকায়। আনারস, কমলা, তরমুজ ইত্যাদি ধরণের ফল খান প্রতিদিনের সেহরিতে এতে করেও পুরো দিন সুস্থ থাকতে পারবেন।
মিষ্টি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মিষ্টি খাবার আপনার দেহের এনার্জি লেভেল নষ্ট করে দেবে দিনের বেলায় যার কারণে আপনি দুর্বলতা অনুভব করবেন পুরো দিন।
খেজুর দেহের এনার্জি ধরে রাখার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। খেজুর যে শুধুমাত্র ইফতারেই খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সেহরির সময়েও দুটো খেজুর খেয়ে নিতে পারেন। এতে করে পুরো দিন দেহে এনার্জি পাবেন।
ভারী খাবার এবং অতিরিক্ত তেল চর্বি ধরণের খাবার খাবেন না একেবারেই সেহরিতে। বিশেষ করে খিচুড়ি, পোলাও বা বিরিয়ানি ধরণের খাবার তো একেবারেই নয়। কারণ এগুলো পুরো দিনই আপনার পেটের সমস্যা ও অস্বস্তির জন্য দায়ী থাকবে।
কী খাবেন
- সেহেরিতে কার্বোহাইড্রেট ও আঁশজাতীয় খাবার খান। এসব খাবার দীর্ঘসময় পেট ভরা থাকতে সাহায্য করবে।
- সেহেরি ও ইফতারে কয়েকটি খেজুর খান। আঁশজাতীয় খাবার খেজুর গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- সেহেরি ও ইফতার মেন্যুতে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফল রাখুন। এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার যা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
- সেহেরিতে ভাত রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে। ভাত হজম হতে সময় নেয় অনেক। পেট ভরা থাকে দীর্ঘক্ষণ।
- শাকসবজির পাশাপাশি মাছ ও মাংস রাখা চাই সেহেরির মেন্যুতে।
- ইফতারে পুষ্টিকর স্যুপ খেতে পারেন। এটি এনার্জি ফিরিয়ে আনবে।
- রোজার সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার কোনও বিকল্প নেই। সেহেরি ও ইফতারে প্রচুর পানি পান করুন যেন পানিশূন্যতা দেখা না দেয়।
কী খাবেন না
- অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। মিষ্টি খাবারে তৃষ্ণা হয় বেশি। এছাড়া হজমেও সমস্যা হতে পারে।
- রোজায় অতিরিক্ত চা/কফি এড়িয়ে চলুন। এগুলো শরীরকে ডিহাইড্রেটেড করে।
- তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে এসব খাবার।
- অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না।
Comments
Post a Comment