গর্ভবতী নারী কি রোজা রাখতে পাবরেন?

প্রেগন্যান্ট অবস্থায় রোজা রাখা নিয়ে কনফিউশনে আছেন? গর্ভবতী নারীরা কি রোজা রাখবেন?


পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখা নিয়ে সন্তান সম্ভবা নারীরা হয়ে পড়েছেন চিন্তিত। তবে চিন্তার কিছু নেই।




গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে হবে না। এটা বাধ্যতামূলক নয়। আপনি যদি মনে করেন যে, রোজা রাখার ফলে আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে; সেক্ষেত্রে ইসলামিক আইন আপনাকে রোজা না রাখার অনুমতি দিয়েছে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন: “আল্লাহ একজন মুসাফিরকে রোজা রাখা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন এবং তার নামাজকে অর্ধেক করে দিয়েছেন; এবং আল্লাহ গর্ভবতী এবং সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান এরকম মায়েদেরকে রোজা থেকে অব্যাহতি দান করেছেন”।তবে, যদি আপনি যথেষ্ট সুস্থ বোধ করেন, আপনার গর্ভাবস্থার সব ঠিক থাকে এবং যদি আপনি আপনার গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় তিনমাস কালে থাকেন, তাহলে রোজা রাখতে পারেন। গর্ভাবস্থার উপর রোজার প্রভাব পুরোপুরি ব্যাখ্যা করার মত যথেষ্ট গবেষণা এখনো হয়নি। তবে, এখন পর্যন্ত যে গবেষণাগুলো হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা মায়েদের শিশুর উপর রোজার প্রভাব খুব সীমিত বা এর কোন প্রভাবই পড়ে না। কিছু গবেষণায় দেখা যেতে পারে যে, গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা মায়েদের সন্তানদের শিক্ষাসংক্রান্ত সামর্থের উপর এর প্রভাব থাকতে পারে। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে রোজা রাখেন এমন মায়েদের সন্তানদের ওজন সামান্য কম হতে পারে; কিন্তু এটিও খুব সামান্য পার্থক্য, প্রায় ১৮ থেকে ৪০ গ্রাম ওজন কম হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব মা গর্ভাবস্থায় রোজা রেখেছেন তাদের সন্তানদের অ্যাপগার স্কোরে অন্যান্য বাচ্চাদের থেকে কোন পার্থক্য থাকে না। রোজা রাখছেন এরকম একজন নারীর রক্তে খুবই সামান্য রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে, তবে এই রাসায়নিক পদার্থ এমন উচ্চ মাত্রায় পোঁছায় না যে, তা আপনার বা আপনার বাচ্চার ক্ষতি করতে পারে। কিছু গবেষণায় আরো দেখা গিয়েছে যে, যেসব মা রোজা রাখেন তাদের অকাল সন্তান প্রসব হয় বা স্বাভাবিক সময়ের কিছুটা পূর্বে সন্তান প্রসব হয়। এই দাবি এখনো যাচাইকৃত নয় এবং এটিকে সত্য বলে ধরে নেওয়ার আগে আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে।

গর্ভবতী নারী কি রোজা রাখতে পারবেন?গর্ভবর্তী নারীরা যদি রোজা রাখেনঃ


গর্ভবর্তী নারীরাও রোজা রাখতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মেডিকেল চেকআপ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন এ্যাপোলো হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী।তামান্না চৌধুরী বলেন, গর্ভবতী নারীদের বাড়তি যত্ন সব সময়ই দরকার। গর্ভবতী হলে রোজা রাখা যাবে কি না তা নিয়ে অনেক সময় তারা নানা সংশয়ে ভোগেন।


শুধু তারাই নন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও থাকেন উৎকণ্ঠায়। কিন্তু গর্ভবতী নারীদের রোজা থাকতে কোনো সমস্যা নেই। তবে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। রোজার আগে ডাক্তারের কাছ গিয়ে চেকআপ করানোটা খুব জরুরি।


তিনি আরো বলেন, গর্ভবতী মায়েরা যেহেতু সারাদিন কিছু খেতে পারবেন না তাই সেহরিতে পুষ্টিকর খাদ্য বেশি খেতে হবে। খাবারে রাখতে হবে দুধের প্রাধান্য।


সঙ্গে প্রোটিন যেমন ডিম, মাছ, মাংস পরিমাণ মতো খেতে হবে। কারণ একজন সাধারণ মানুষের তুলনায় গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির প্রয়োজন বেশি। এক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েরা রোজার আগে ডাক্তারের কাছ থেকে রোজার আগে ও পরের সময়ের খাদ্য তালিকা নিয়ে নিতে পারেন। এতে করে মা ও বাচ্চা দু’জনই সুস্থ  থাকবেন।


তামান্না চৌধুরীর বলেন, যেকোনো গর্ভবতী মায়ের রুটিন চেকআপ ছাড়াও রোজা শুরুর আগে তার চেকআপ করাতে হবে। কারণ মনে রাখতে হবে একজন গর্ভবতী নারী মানে  মা ও শিশু দু’জনই।


রমজানেও সময় বের করে প্রতিদিন ১০ঘণ্টা ঘুমাতে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে গর্ভবতী মাকে।


গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা থাকলে, বা  কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা হলে ইসলামী শরিয়া মতে সেই মায়ের রোজা না রাখলেও চলবে।



গর্ভবতী নারী কি রোজা রাখতে পাবরেন?

Comments

Popular posts from this blog

কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে প্রতিবেশীর হক

বাচ্চাদের কেনো ভাতের মাড় খাওয়াবেন জেনে নিন!

রোজায় সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয় কিছু টিপস